আলোর বর্ণালী (Visible Spectrum) তৈরি হয় যখন সাদা আলো বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যে বিভক্ত হয়। এটি মূলত একটি প্রিজম বা কোনো অন্যান্য মাধ্যমের মাধ্যমে আলো ভাঙ্গা (dispersion) হলে ঘটে। এই প্রক্রিয়াটিকে বলা হয় বর্ণালী বিভাজন (Spectrum Dispersion)।
আলোর বর্ণালী তৈরির প্রক্রিয়া:
1. সাদা আলো: সূর্য থেকে আগত আলো একটি মিশ্রিত আলো, যা নানা তরঙ্গদৈর্ঘ্য এবং রঙের সমষ্টি। এই আলোকে সাদা আলো বলা হয়।
2. প্রিজম বা আর্দ্র মাধ্যমের মাধ্যমে আলোর প্রবাহ: যখন সাদা আলো একটি প্রিজম বা কোনো সুষম আংশিক দানবের মতো আচ্ছাদিত মাধ্যমের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়, তখন আলো ভাঙে এবং আলোর বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্য আলাদা হয়ে যায়। ভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্য ভিন্ন রকম গতিতে প্রবাহিত হয়, ফলে আলো ভেঙে তার বিভিন্ন রঙের অংশ তৈরি হয়।
3. তরঙ্গদৈর্ঘ্য অনুসারে বিভাজন: আলোতে থাকা প্রতিটি রঙের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য আলাদা। যেমন:
লাল (Red) – সর্বোচ্চ তরঙ্গদৈর্ঘ্য (প্রায় ৭০০ ন্যানোমিটার)
কমলা (Orange)
হলুদ (Yellow)
সবুজ (Green)
নীল (Blue)
ইন্দিগো (Indigo)
বেগুনি (Violet) – সর্বনিম্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্য (প্রায় ৪০০ ন্যানোমিটার)
4. আলোর বর্ণালী: এই রঙগুলো একে একে আলোর বর্ণালী তৈরি করে। এটি একটি ধারাবাহিক ধারা হিসেবে দেখা যায়, যেখানে লাল রঙটি সবচেয়ে কম শক্তি এবং দীর্ঘতম তরঙ্গদৈর্ঘ্য ধারণ করে, আর বেগুনি রঙটি সবচেয়ে বেশি শক্তি এবং ছোট তরঙ্গদৈর্ঘ্য ধারণ করে।
উপসংহার:
এইভাবে, সাদা আলো বিভিন্ন রঙের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যে বিভক্ত হয়ে আলোর বর্ণালী তৈরি করে। এটি প্রাকৃতিকভাবে দেখা যায় যখন সূর্যের আলো বৃষ্টির ফোঁটায় বা কোনো প্রিজমের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়।