40 বার দেখা হয়েছে
"বাংলার ইতিহাস" বিভাগে করেছেন

1 টি উত্তর

0 জনের পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন
ইসলামী স্বর্ণযুগ (৮০০-১৪০০ খ্রিস্টাব্দ) ছিল বৈজ্ঞানিক গবেষণা, চিকিৎসা, গণিত, astronomy এবং অন্যান্য শাস্ত্রের ক্ষেত্রে অসাধারণ অগ্রগতির একটি সময়কাল। এই সময়কালটি ছিল মুসলিম বিশ্বের জন্য একটি বৈজ্ঞানিক সোনালি যুগ, যেখানে বিভিন্ন মুসলিম বিজ্ঞানী ও দার্শনিকগণ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। ইসলামী স্বর্ণযুগের কিছু প্রধান বৈজ্ঞানিক অর্জনগুলো হলো:

১. গণিত:

আল-খোয়ারিজমি: গণিতবিদ আল-খোয়ারিজমি 'অ্যালজেব্রা' (algebra) শাস্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পরিচিত। তার বই "কিতাব আল-মুখতাসার ফি হিসাব আল-জবর ওয়াল-মুকাবলা" অ্যালজেব্রার প্রথম মৌলিক রচনা। তিনি সংখ্যাতত্ত্ব ও বীজগণিতের ক্ষেত্রে অমূলক ধরণের সমাধান পদ্ধতি তৈরি করেছিলেন।

সান্দালি: গণনার ভগ্নাংশ (fractions) এবং দশমিক সিস্টেমের উন্নতি এবং গণনার জন্য নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেন।

২. অ্যাস্ট্রোনমি (জ্যোতির্বিজ্ঞান):

আল-বাতানী: আল-বাতানী ছিলেন একজন প্রখ্যাত মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানী, যিনি তার "য্যোতির্বিজ্ঞান" গ্রন্থে সূর্য ও চাঁদের গতিপথ এবং তাদের বিভিন্ন অবস্থান সম্পর্কে বিশদ তথ্য প্রদান করেন। তিনি পৃথিবীর অক্ষের পরিধি, সূর্যের অবস্থান এবং অন্যান্য জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক ঘটনাবলী সম্পর্কে গবেষণা করেছিলেন।

আল-ফারগানি: তিনি পৃথিবী, সূর্য এবং চাঁদের গতি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেন এবং ভূ-পৃষ্ঠের পরিমাপের জন্য আরও সঠিক যন্ত্রাবলী তৈরি করেন।

৩. চিকিৎসা:

ইবনে সিনা (অবু আলি সিনা): তার "কানুন ফি টিব" (The Canon of Medicine) গ্রন্থটি চিকিৎসাবিজ্ঞানের অগ্রগতিতে বিপ্লব সৃষ্টি করে। এটি শতাব্দী ধরে পশ্চিমে শিক্ষার একটি মৌলিক বই ছিল এবং আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করেছে।

আল-রাজি (রজী): তিনি ছিলেন একজন বিশিষ্ট চিকিৎসক এবং রসায়নবিদ, যিনি "আল-হাওই" নামে একটি বৃহৎ চিকিৎসা গ্রন্থ লিখেছিলেন। তিনি ভ্যাকসিনেশন এবং সংক্রমণ নিয়ে গবেষণা করেন।

৪. রসায়ন (কেমিস্ট্রি):

জাবির ইবনে হাইয়ান: তিনি রসায়নের একজন পioneer, যাকে "রসায়নের পিতা" বলা হয়। তার লেখা গ্রন্থ "কিতাব আল-কিমিয়া" রসায়নবিদ্যায় মৌলিক চিন্তাভাবনা এবং নতুন পদ্ধতির উদ্ভাবন করেছিল। তিনি বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান, সলভেন্টস, এসিড ও বেস নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন।

৫. ভূগোল:

ইবনে খোরদাদবেহ: তিনি ছিলেন একজন প্রখ্যাত ভূগোলবিদ এবং তাঁর "কিতাব আল-মানাসিক" গ্রন্থে বিশ্বব্যাপী সড়ক ও জলপথের বর্ণনা দিয়েছিলেন।

আল-ইদ্রিসি: তিনি একটি মানচিত্র এবং ভূগোল সম্পর্কিত বই "নুজাত আল-মুশতাক" রচনা করেন, যা মধ্যযুগীয় ইউরোপের ভূগোলবিদদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

৬. পদার্থবিজ্ঞান:

আল-হাজেন (ইবনে আল-হাইথাম): তাকে "অপটিক্সের পিতা" বলা হয়। তার "কিতাব আল-মানাজার" গ্রন্থে তিনি আলো, ছায়া, প্রতিফলন এবং প্রতিসরণ নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণা করেন এবং অপটিক্সের মৌলিক ধারণাগুলোর ভিত্তি স্থাপন করেন।

৭. ইঞ্জিনিয়ারিং এবং যন্ত্রপাতি:

মুসলিম বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি, বিশেষ করে জলচালিত পাম্প, শক ওয়েভ ডিটেকশন যন্ত্র, অটোমেটিক ঘড়ি এবং স্যাঁতসেঁতে অবস্থার জন্য ইনফ্রারেড যন্ত্র তৈরি করেছিলেন।

৮. অন্য বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি:

মুসলিম দার্শনিকেরা যেমন আল-ফারাবী এবং ইবনে রুশদ দর্শন, যুক্তিবিদ্যা এবং ধর্মীয় তত্ত্বের মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে বের করার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন, যা পরবর্তী সময়ে পশ্চিমা দর্শন এবং বিজ্ঞানকে প্রভাবিত করেছিল।

উপসংহার:

ইসলামী স্বর্ণযুগ বৈজ্ঞানিক, চিকিৎসা, গণিত, পদার্থবিদ্যা, জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং অন্যান্য শাস্ত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সাধন করেছে। মুসলিম বিজ্ঞানীরা যে গবেষণা করেছেন, তা পরবর্তীতে ইউরোপের রেনেসাঁ (পুনর্জাগরণ) যুগে প্রভাব ফেলেছিল এবং আজকের আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ভিত্তি স্থাপন করেছে।

এরকম আরও কিছু প্রশ্ন

1 টি উত্তর
1 টি উত্তর
26 ডিসেম্বর, 2020 "ইসলামের ইতিহাস" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন Bodrul Alom
0 টি উত্তর
0 টি উত্তর
1 টি উত্তর
1 টি উত্তর
1 টি উত্তর
1 টি উত্তর
3 সেপ্টেম্বর, 2020 "বাংলার ইতিহাস" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন Shakil
2 টি উত্তর

36,084 টি প্রশ্ন

35,317 টি উত্তর

1,738 টি মন্তব্য

3,759 জন সদস্য

Ask Answers সাইটে আপনাকে সুস্বাগতম! এখানে আপনি প্রশ্ন করতে পারবেন এবং অন্যদের প্রশ্নে উত্তর প্রদান করতে পারবেন ৷ আর অনলাইনে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য উন্মুক্ত তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলার কাজে অবদান রাখতে পারবেন ৷
2 জন অনলাইনে আছেন
0 জন সদস্য, 2 জন অতিথি
আজকে ভিজিট : 8118
গতকাল ভিজিট : 18736
সর্বমোট ভিজিট : 52055554
এখানে প্রকাশিত সকল প্রশ্ন ও উত্তরের দায়ভার কেবল সংশ্লিষ্ট প্রশ্নকর্তা ও উত্তর দানকারীর৷ কোন প্রকার আইনি সমস্যা Ask Answers কর্তৃপক্ষ বহন করবে না৷
...