49 বার দেখা হয়েছে
"আবিষ্কার" বিভাগে করেছেন
পূনঃট্যাগ যুক্ত করেছেন

1 টি উত্তর

0 জনের পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন
জিনোম এডিটিং হলো একটি প্রযুক্তি যা জীববিজ্ঞানীদেরকে ডিএনএ-র নির্দিষ্ট অংশ পরিবর্তন বা সম্পাদনা করার সুযোগ দেয়। এটি একটি শক্তিশালী টুল হিসেবে ব্যবহৃত হলেও এর নৈতিক এবং সামাজিক প্রভাবগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বিতর্কিত। কিছু প্রধান প্রভাব নিম্নরূপ:

নৈতিক প্রভাব:

1. জীবের মৌলিক পরিবর্তন: জিনোম এডিটিংয়ের মাধ্যমে মানুষের বা অন্যান্য জীবের জিন বদলানো যায়, যা জীবনের মৌলিক প্রকৃতিকে পরিবর্তন করতে পারে। এটি নিয়ে নৈতিক প্রশ্ন ওঠে যে, কীভাবে জীবনের নীতিগত সীমা নির্ধারণ করা হবে, এবং কোথায় রক্ষাকবচ স্থাপন করা উচিত।

2. "ডিজাইনার বেবি": জিনোম এডিটিংয়ের মাধ্যমে সন্তানের শারীরিক বা মানসিক বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করার সম্ভাবনা রয়েছে, যেমন বুদ্ধিমত্তা, উচ্চতা, বা অন্য কোনো শারীরিক গুণ। এটি সমাজে বৈষম্য সৃষ্টি করতে পারে, কারণ শুধুমাত্র ধনী বা সুবিধাপ্রাপ্ত পরিবারগুলি এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারে, যা সামাজিক অসমতার সৃষ্টি করবে।

3. জিনেটিক ডিসক্রিমিনেশন: যদি জিনোম এডিটিং প্রযুক্তি সহজলভ্য হয়, তবে ভবিষ্যতে মানুষের জিনগত পটভূমি ভিত্তিক বৈষম্য তৈরি হতে পারে। যেমন, চাকরি বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জিনগত ত্রুটি বা উপকারিতা অনুসারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

4. নির্বাচনী চরিত্র পরিবর্তন: এটি মানুষের আত্মপরিচয়ের ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে, কারণ আমাদের জিনগত বৈশিষ্ট্যগুলি মানুষের পরিচয়ের একটি বড় অংশ। এমনকি কিছু মানুষের জন্য জিনেটিক পরিবর্তন এক ধরনের "প্রাকৃতিক নির্বাচন" এর পরিবর্তন হতে পারে, যা সামাজিকভাবে নৈতিক সংকট সৃষ্টি করতে পারে।

সামাজিক প্রভাব:

1. সামাজিক অসমতা: জিনোম এডিটিং প্রযুক্তি সমাজে আরো বিভাজন সৃষ্টি করতে পারে, কারণ এটি শুধুমাত্র কিছু বিশেষ শ্রেণির মানুষের জন্য সহজলভ্য হতে পারে। যারা এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারবে, তারা শারীরিক বা মানসিকভাবে এগিয়ে থাকবে, যা সমাজে বৈষম্য বাড়াবে।

2. ভ্রান্ত ধারণার বৃদ্ধি: যদি জিনোম এডিটিং প্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্দেশ্যগুলি সঠিকভাবে বোঝানো না হয়, তবে এর ফলে ভুল বা অবৈজ্ঞানিক ধারণার প্রভাব সমাজে পড়তে পারে, যেমন "জিনেটিক পারফেকশন" বা "অতিরিক্ত ক্ষমতা" নিয়ে নানা ধরনের বিভ্রান্তি।

3. জীববৈচিত্র্য এবং প্রাকৃতিক সংরক্ষণ: কিছু বিজ্ঞানী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, অত্যাধিক জিনোম এডিটিং করলে প্রাকৃতিক জীবনধারা বা প্রজাতির বৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, কোনো প্রজাতির জিন পরিবর্তন করলে তাদের প্রাকৃতিক বাসস্থান বা বাস্তুসংস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

4. গবেষণা এবং স্বাস্থ্য পরিষেবায় পরিবর্তন: জিনোম এডিটিংয়ের মাধ্যমে কিছু গুরুতর রোগ যেমন ক্যান্সার বা বংশগত রোগের প্রতিকার সম্ভব হতে পারে, যা বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সহায়তা করতে পারে। তবে, এর সুবিধাগুলো সবার কাছে পৌঁছানো নিশ্চিত করতে হবে, যাতে এটি কোনো শ্রেণির জন্য বিশেষ সুবিধা হয়ে না দাঁড়ায়।

সামগ্রিকভাবে, জিনোম এডিটিংয়ের নৈতিক এবং সামাজিক প্রভাবগুলি গভীর এবং চ্যালেঞ্জিং। যদিও এর মাধ্যমে মানবতাকে অনেক উন্নতির সুযোগ দেওয়া সম্ভব, তবে এর ব্যবহারে কঠোর নীতিগত এবং সামাজিক নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন, যাতে এর অপব্যবহার ও ভুল প্রয়োগের ফলে ভবিষ্যতে নেতিবাচক পরিণতি না ঘটে।

এরকম আরও কিছু প্রশ্ন

1 টি উত্তর
1 টি উত্তর
10 অক্টোবর, 2023 "আবিষ্কার" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন Jahidul Islam
1 টি উত্তর
21 সেপ্টেম্বর, 2023 "জীব বিজ্ঞান" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন M.S.C_Safwana
1 টি উত্তর
5 নভেম্বর, 2021 "গবেষণা" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন জয়
1 টি উত্তর
4 এপ্রিল, 2021 "জীব বিজ্ঞান" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন Md.Suny

36,084 টি প্রশ্ন

35,317 টি উত্তর

1,738 টি মন্তব্য

3,759 জন সদস্য

Ask Answers সাইটে আপনাকে সুস্বাগতম! এখানে আপনি প্রশ্ন করতে পারবেন এবং অন্যদের প্রশ্নে উত্তর প্রদান করতে পারবেন ৷ আর অনলাইনে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য উন্মুক্ত তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলার কাজে অবদান রাখতে পারবেন ৷
34 জন অনলাইনে আছেন
0 জন সদস্য, 34 জন অতিথি
আজকে ভিজিট : 22362
গতকাল ভিজিট : 18736
সর্বমোট ভিজিট : 52069768
এখানে প্রকাশিত সকল প্রশ্ন ও উত্তরের দায়ভার কেবল সংশ্লিষ্ট প্রশ্নকর্তা ও উত্তর দানকারীর৷ কোন প্রকার আইনি সমস্যা Ask Answers কর্তৃপক্ষ বহন করবে না৷
...