69 বার দেখা হয়েছে
"আবিষ্কার" বিভাগে করেছেন

1 টি উত্তর

0 জনের পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন

কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন তৈরির পেছনের গবেষণা প্রক্রিয়া ছিল এক অসাধারণ দ্রুত এবং আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা। এই প্রক্রিয়া কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপের মধ্যে বিভক্ত ছিল:

১. ভাইরাসের সিকোয়েন্সিং (Viral Sequencing):

২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষদিকে, চীনে প্রথম কোভিড-১৯ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। বিজ্ঞানীরা দ্রুত ভাইরাসের জেনেটিক সিকোয়েন্স নির্ণয় করে, যা ভ্যাকসিনের ডিজাইনে ব্যবহৃত হয়। এটি ছিল ভ্যাকসিন তৈরির প্রথম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন শনাক্ত করা হয়, যা মানব কোষে প্রবেশের জন্য ব্যবহার হয় এবং ভ্যাকসিনের লক্ষ্যবস্তু হয়।

২. ভ্যাকসিন প্ল্যাটফর্ম ডিজাইন:

কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন তৈরির জন্য প্রধানত তিনটি প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহৃত হয়:

  • mRNA ভ্যাকসিন (Pfizer-BioNTech, Moderna): এই ভ্যাকসিনে ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের একটি ডিজিটাল কপি মানুষের কোষে প্রবাহিত করা হয়, যা কোষকে প্রোটিন তৈরি করতে সহায়ক হয় এবং শরীরকে এটি শনাক্ত করতে শেখায়।
  • ভেক্টরভিত্তিক ভ্যাকসিন (AstraZeneca, Johnson & Johnson): এই ভ্যাকসিনে একটি ক্ষতিকর না হওয়া ভাইরাসকে ব্যবহার করে কোভিড-১৯ স্পাইক প্রোটিনের জেনেটিক উপাদান সরবরাহ করা হয়।
  • প্রথাগত ইনএকটিভেটেড বা সাব-ইউনিট ভ্যাকসিন (Sinovac, Sinopharm): এখানে ভাইরাসের নিষ্ক্রিয় বা অংশবিশেষ ব্যবহার করা হয় শরীরের প্রতিরোধী সিস্টেমকে সক্রিয় করতে।

৩. প্রাথমিক পরীক্ষা (Preclinical Testing):

গবেষকরা পরীক্ষাগারে প্রাণী (যেমন, মাউস, বানর) এ ভ্যাকসিনের নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতা পরীক্ষা করেন। এখানে, বিভিন্ন ডোজে পরীক্ষা চালানো হয়, যেন মানব শরীরে এটি সুরক্ষিতভাবে কাজ করতে পারে।

৪. ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল (Clinical Trials):

ভ্যাকসিনটি মানবদেহে পরীক্ষা করা হয়। এটি সাধারণত তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত:

  • ফেজ ১: নিরাপত্তা এবং দেহের প্রতিক্রিয়া পরীক্ষা করা হয়।
  • ফেজ ২: ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা এবং সঠিক ডোজ নির্ধারণ করা হয়।
  • ফেজ ৩: হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবককে টিকা দেওয়া হয় এবং ভ্যাকসিনের দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা যাচাই করা হয়।

৫. প্রমাণীকরণ এবং অনুমোদন:

ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ (যেমন, FDA, EMA) পরীক্ষার ফলাফল পর্যালোচনা করেন এবং দ্রুত অনুমোদন দেন।

৬. উৎপাদন ও বিতরণ:

অনুমোদনের পর, ভ্যাকসিনের দ্রুত উৎপাদন শুরু হয়। বিশ্বজুড়ে ভ্যাকসিন বিতরণের জন্য বিভিন্ন সরকার ও প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে সহযোগিতা এবং লজিস্টিক সহায়তা প্রদান করা হয়।

এই গবেষণার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হয়েছিল, কারণ কোভিড-১৯ মহামারির প্রাদুর্ভাব পুরো বিশ্বকে প্রভাবিত করেছিল এবং একটি কার্যকরী ভ্যাকসিনের প্রয়োজন ছিল। আধুনিক বিজ্ঞান, দ্রুত প্রযুক্তি এবং বিশ্বব্যাপী সহযোগিতার মাধ্যমে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন তৈরি করা সম্ভব হয়েছিল।

এরকম আরও কিছু প্রশ্ন

1 টি উত্তর
11 মার্চ, 2020 "শব্দের পূর্ণরূপ" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন অজ্ঞাতকুলশীল
1 টি উত্তর
11 মার্চ, 2020 "রোগ ও চিকিৎসা" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন অজ্ঞাতকুলশীল

36,270 টি প্রশ্ন

35,483 টি উত্তর

1,742 টি মন্তব্য

3,807 জন সদস্য

Ask Answers সাইটে আপনাকে সুস্বাগতম! এখানে আপনি প্রশ্ন করতে পারবেন এবং অন্যদের প্রশ্নে উত্তর প্রদান করতে পারবেন ৷ আর অনলাইনে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য উন্মুক্ত তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলার কাজে অবদান রাখতে পারবেন ৷
3 জন অনলাইনে আছেন
0 জন সদস্য, 3 জন অতিথি
আজকে ভিজিট : 4666
গতকাল ভিজিট : 6762
সর্বমোট ভিজিট : 53208861
এখানে প্রকাশিত সকল প্রশ্ন ও উত্তরের দায়ভার কেবল সংশ্লিষ্ট প্রশ্নকর্তা ও উত্তর দানকারীর৷ কোন প্রকার আইনি সমস্যা Ask Answers কর্তৃপক্ষ বহন করবে না৷
...