মহাকাশে দীর্ঘ সময় অবস্থান করলে মাইক্রোগ্রাভিটির (অভিকর্ষের প্রায় অনুপস্থিতি) কারণে মানুষের হাড় এবং পেশির উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়ে। প্রধান প্রভাবগুলো হলো:
হাড়ের উপর প্রভাব:
1. অস্টিওপোরোসিস: মাধ্যাকর্ষণের অভাবে হাড়ের উপর কোনো চাপ না পড়ায় হাড়ের ঘনত্ব কমতে থাকে।
2. হাড় দুর্বলতা: হাড়ের খনিজ পদার্থ, বিশেষত ক্যালসিয়াম, শরীর থেকে বেরিয়ে যায়, ফলে হাড় ভঙ্গুর হয়ে পড়ে।
3. ফ্র্যাকচারের ঝুঁকি: পৃথিবীতে ফিরে আসার পর হাড় দুর্বল থাকার কারণে ভাঙার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
পেশির উপর প্রভাব:
1. পেশি ক্ষয়: মাইক্রোগ্রাভিটিতে শারীরিক কার্যকলাপ কমে যাওয়ায় পেশি দুর্বল হতে শুরু করে।
2. পেশি শক্তি হ্রাস: দীর্ঘ সময় ধরে মাধ্যাকর্ষণ না থাকলে পেশির টোন ও কার্যক্ষমতা কমে যায়।
3. অধঃপতন: বিশেষত পায়ের এবং মেরুদণ্ডের পেশি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
---
প্রতিরোধের উপায়:
1. ব্যায়াম:
মহাকাশে প্রতিদিন ২ ঘণ্টা কার্ডিও এবং রেজিস্ট্যান্স ব্যায়াম করার ব্যবস্থা রাখা হয় (যেমনঃ স্পেস বাইক, ট্রেডমিল, এবং রেজিস্ট্যান্স মেশিন)।
এই ব্যায়ামগুলি হাড় এবং পেশিতে চাপ প্রয়োগ করে, যা ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে।
2. ডায়েট:
পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি গ্রহণ করা।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, যা পেশি ও হাড়ের ক্ষয় রোধ করে।
3. মেডিকেশন:
হাড়ের ক্ষয় রোধে বিসফসফোনেটস নামক ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।
ভিটামিন ডি এবং অন্যান্য সাপ্লিমেন্টস গ্রহণ।
4. কৃত্রিম অভিকর্ষ:
ভবিষ্যতে কৃত্রিম অভিকর্ষ তৈরি করে মহাকাশযানে এক ধরনের চাকা ব্যবহার করা হতে পারে, যা অভিকর্ষের প্রভাব অনুকরণ করবে।
5. মনোভাবনাগত প্রস্তুতি:
মহাকাশচারীদের পৃথিবীতে ফিরে আসার পর হাড় এবং পেশি পুনরুদ্ধারে বিশেষ ফিজিওথেরাপি ও পুনর্বাসন প্রোগ্রাম দেওয়া হয়।
এই পদক্ষেপগুলোর মাধ্যমে মহাকাশচারী
রা দীর্ঘ সময় মহাকাশে অবস্থানের সময় শারীরিক ক্ষতি কমাতে সক্ষম হন।